Header Ads

জেলা পরিষদ নির্বাচনে টাকার খেলা

আগামীকাল দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা পরিষদের নির্বাচন। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় মুখোমুখি অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ভোট গ্রহণের সময় এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের উত্তেজনা। প্রকাশ্যে ভোট না দিলে হুমকি দিচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোট কেনার নামে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। অল্পসংখ্যক ভোটার হওয়ায় প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে মোটা অঙ্কের টাকাসহ উপহার বিতরণ করছেন। নির্বাচন ঘিরে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না ইসি। স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার মো: শাহনেওয়াজ বলেন, কয়েকজন প্রার্থী ও সরকারদলীয় সংসদ সদস্যরা নিজ এলাকায় গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। মৌখিক ও লিখিত আকারে আমরা এমন অভিযোগ পেয়েছি। ভোটের আর মাত্র দুই দিন রয়েছে। সংসদ সদস্যদের অনুরোধ করছি, আপনার এলাকা থেকে চলে আসেন। আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে কেউ প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি যেই হন না কেন, অনিয়ম করলে ছাড় দেয়া হবে না। ভোটকেন্দ্রে কেউ যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম করতে না পারে সে জন্য প্রতিটি ভোটকক্ষের সামনেই একজন করে নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রাখা হবে।
ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ ও ব্যালটে কোনো চিহ্ন দিলে তা বাতিল করা হবে উল্লেখ করে শাহনেওয়াজ বলেন, কোনো ভোটার ভোটকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ভোটারকে তল্লাশি করে তা নিশ্চিত করবেন। ব্যালট পেপারের কোথাও কোনো প্রকার চিহ্ন ব্যবহার করলে তা বাতিল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে প্রথমবারের মতো এ নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়। ভোলা ও ফেনী জেলায় চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে সবাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হন। ফলে ২৮ ডিসেম্বর ৫৯ জেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। তবে চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে ৩৯ জেলায়। কারণ এরই মধ্যে ২২ জেলায় পরিষদ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে প্রতি জেলায় ১৫টি করে ভোটকেন্দ্র থাকবে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে।
নির্বাচনে মেয়র পদে ১২৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে দুই হাজার ৯৮৫ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৮০৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। ৫৩ জন সংরক্ষিত সদস্য ও ১৩৯ জন সাধারণ সদস্যও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সারা দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ৬৩ হাজার ১৪৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৪৮ হাজার ৩৪৩ ও নারী ১৪ হাজার ৮০০ জন।
চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) সংবাদদাতা জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে ফরিদপুর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মাত্র ৮২টি ভোট হওয়ায় প্রার্থীরা কালো টাকা বিতরণ করছে। কোনো কোনো প্রার্থী ভোট প্রতি চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিতরণ করছে।
সোমবার উপজেলা সদর ইউনিয়নের এক প্রার্থীর সমর্থক জাবেদ খান জানান, ‘দুর্গম অঞ্চলের মেম্বারদের ভোটপ্রতি ৪০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। এখন ভোটাররা বেইমানি না করলে আমরা পাস করে যাবো।’
উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের আরেক সমর্থক হাসমত আলী বলেন, ‘বাড়ির ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের ভোট প্রতি ১০ হাজার ও অন্য ইউনিয়নগুলোর ভোটার প্রতি ২০ হাজার টাকা বাজেট করে আমরা নির্বাচন চালিয়ে যাচ্ছি।’ তিনিও বিজয়ের পূর্ণ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুব জামান ভুলুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ হয়েছে। গতকাল সোমবার স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আ’লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন।
মোহাম্মদ আলী সরকার তার অভিযোগে বলেন, গত রোববার তানোর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনী সভা করেন মাহবুব জামান ভুলু। এ সময় তিনি তার পক্ষে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। এরপর তিনি তাদের ভুরিভোজ করান। পরে তিনি শুধু চেয়ারম্যানদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
অভিযোগপত্রে মোহাম্মদ আলী সরকার আরো বলেন, সরকারি অডিটোরিয়াম ও ইউএনওর কার্যালয় ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোয় নির্বাচনী আচরণবিধির ৬ এর (খ) ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। এ ছাড়া ভোটারদের ভুরিভোজ করিয়ে ভুলু নির্বাচনী আচরণবিধির ১৭ এর (খ) ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এ ধরনের বিধিবহির্ভূত প্রচারণায় তার সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য ভুলুর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন জানিয়েছ

No comments

bd24news®. Powered by Blogger.