যৌন জীবন সম্পর্কে ৪ টি প্রশ্নের ইসলামী উত্তর
প্রশ্নঃ ১। গুপ্ত অভ্যাস (হস্তমৈথুন) ব্যবহার করা বৈধও কি?
গুপ্ত অভ্যাস (হাত বা অন্য কিছুর মাধ্যমে বীর্যপাত, স্বমৈথুন বা হস্ত মৈথুন) করা কিতাব, সুন্নাহ ও সুস্থ বিবেকের নির্দেশ মতে হারাম।
কিতাব বা কুরআনের দলীল; আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে
নিজেদের পত্নি অথবা অধিকারভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে অন্যথা করলে তারা
নিন্দনীয় হবে না। আর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই
সীমালঙ্ঘনকারী।” (সূরা মু’মিনূন ৫-৭)
সুতরাং যে ব্যক্তি তার স্ত্রী ও
অধিকারভুক্ত দাসী (অধিকারভুক্ত দাসী বলতে ক্রীতদাসী ও কাফের যুদ্ধবন্দিনীকে
বুঝানো হয়েছে। এখানে কাজের মেয়ে, দাসী, খাদেম বা চাকরানী উদ্দেশ্য নয়।)
ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা কামলালসা চরিতার্থ করতে চায়, সে ব্যক্তি “এদের ছাড়া
অন্যকে কামনা করে।” বলা বাহুল্য, এই আয়াতের পরিপেক্ষিতে সে সীমালঙ্ঘঙ্কারী
বলে বিবেচিত হবে।
সুন্নাহ থেকে দলীল, আল্লাহ্র নবী (সঃ)
বলেন, “হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্ত্রী সঙ্গম ও বিবাহ খরচে
সমর্থ, সে যেন বিবাহ করে! কারণ টা অধিক দৃষ্টি-সংযতকারী এবং অধিক যৌনাঙ্গ
রক্ষাকারী, যেহেতু তা এর জন্য (খাসী করার মত) কাম দমন কারীর সমান।”
(বুখারী, মুসলিম)
সুতরাং নবী (সঃ) বিবাহে অসমর্থ ব্যক্তিকে
রোযা রাখতে আদেশ করলেন, অথচ যদি হস্তমৈথুন বৈধ হত, তবে নিশ্চয় তিনি তা করতে
নির্দেশ দিতেন। অতএব তা সহজ হওয়া স্বত্বেও যখন তিনি তা করতে নির্দেশ দিলেন
না, তখন জানা গেল যে তা বৈধ নয়।
আর সুচিন্তিত মত এই যে, যেহেতু এই কাজে
বহুমুখী ক্ষতি ও অনিষ্টের আশঙ্কা রয়েছে, যা চিকিৎসাবিদগণ উল্লেখ করে থাকেন;
এতে এমন ক্ষতি রয়েছে যা স্বাস্থ্যের পক্ষে বড় বিপদ বিপজ্জনক; এ কাজ
যৌনশক্তিকে দুর্বল করে ফেলে, চিন্তাশক্তি ও দূরদর্শিতার ক্ষতি সাধন করে এবং
কখনো বা এর অভ্যাসী ব্যক্তিকে প্রকৃত দাম্পত্যসুখ থেকে বঞ্চিত করে। কারণ
যে কেউ এ ধরনের অভ্যাসে নিজ কাম-লালসাকে চরিতার্থ করে থাকে, সে হয়তো বা
বিবাহের প্রতি ভ্রূক্ষেপই করবে না। (ইবনে উষাইমীন)
প্রশ্নঃ ২। লিঙ্গ স্পর্শ না করে স্ত্রী সহবাসের কথা কল্পনা করে বীর্যপাত করা কি বৈধ?
না
এ কাজ বৈধ নয়। কারণ তা ব্যাভিচারের দিকে আকর্ষণ করতে পারে। যুবকের উচিৎ
বিবাহের আগে অথবা স্ত্রীর নিকটবর্তী হওয়ার আগ পর্যন্ত সুচিন্তা করা।
কুচিন্তা এসে গেলে ইচ্ছাকৃতভাবে কল্পনা বিহার না করা। ৬৩১ (লাজনাহ দায়েমাহ)
প্রশ্নঃ ৩। স্ত্রীর যোনিপথ সংকীর্ণ হলে স্বামী তার পায়খানারদ্বারে সঙ্গম করতে পারে কি?
স্ত্রীর
যোনিপথ সংকীর্ণ ও সঙ্গমের অযোগ্য হলে স্বামী তার পায়খানারদ্বারে সঙ্গম
করতে পারে না। যেমন সঙ্গমযোগ্য যোনি না থাকলে সেই স্ত্রীকে স্বামী তালাক
দিতে পারে। যেহেতু পায়ুপথ সঙ্গমস্থল নয়। তা হলে তাকে তালাক দেওয়া বৈধ হতো
না। ৬৩২ (আযওয়াউল বায়ান ১/৯৪ দ্রঃ)
প্রশ্নঃ ৪। মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে ধারনা করে স্ত্রী সহবাসের পর পুনরায় খুন দেখা গেলে গোনাহ হবে কি? অতঃপর করণীয় কি?
প্রবল
ধারণায় যখন বুঝা যাবে যে, মহিলা পবিত্র হয়ে গেছে, তখন তাকে গোসল করে নামায
রোযা করতে হবে। কিন্তু নামায রোযা শুরু করবার পর অথবা স্বামী সঙ্গমের পর
যদি পুনরায় খুন দেখে তাহলে গোনাহ হবে না। যেহেতু খুন থাকা অবস্থায় মাসিক
জেনে সঙ্গম করলে গোনাহ হবে। অবশ্য যদি সেই খুন অভ্যাসগত প্রিয়ডের ভিতরে হয়,
তাহলে তা মাসিকের খুন।
সুতরাং অতঃপর পুনরায় নামায রোযা ও সঙ্গমাদি বন্ধ করতে হবে। পক্ষান্তরে তা যদি প্রিয়ডের বাইরে হয়, তাহলে তা মাসিকের খুন নয়, তাকে “ইস্তিহাযা”র খুন বলে। তাতে কোন দোষ হবে না। তবে মহিলার উচিৎ, অভ্যাসগত প্রিয়ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত খুন বন্ধ দেখে স্বামী সহবাসে তড়িঘড়ি না করা। উচিৎ হল, সাদা স্রাব বের হতে শুরু না হওয়া পর্যন্ত অথবা পরিপূর্ণরূপে খুন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অথবা প্রিয়ডের গনা দিন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। নচেৎ স্ত্রী জেনেশুনে বাঁধা না দিলে তার গোনাহ হবে। (মুহাম্মাদ স্বালেহ আল-মুনাজ্জিদ)
সুতরাং অতঃপর পুনরায় নামায রোযা ও সঙ্গমাদি বন্ধ করতে হবে। পক্ষান্তরে তা যদি প্রিয়ডের বাইরে হয়, তাহলে তা মাসিকের খুন নয়, তাকে “ইস্তিহাযা”র খুন বলে। তাতে কোন দোষ হবে না। তবে মহিলার উচিৎ, অভ্যাসগত প্রিয়ড শেষ না হওয়া পর্যন্ত খুন বন্ধ দেখে স্বামী সহবাসে তড়িঘড়ি না করা। উচিৎ হল, সাদা স্রাব বের হতে শুরু না হওয়া পর্যন্ত অথবা পরিপূর্ণরূপে খুন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অথবা প্রিয়ডের গনা দিন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। নচেৎ স্ত্রী জেনেশুনে বাঁধা না দিলে তার গোনাহ হবে। (মুহাম্মাদ স্বালেহ আল-মুনাজ্জিদ)
No comments